Friday, April 27, 2018

মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের শব্দ সৈনিক সাবেক মাদারীপুর ছাত্রলীগের সভাপতি সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন

সৃতির আয়নায় অম্লান মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের শব্দ সৈনিক সাবেক মাদারীপুর ছাত্রলীগের সভাপতি সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন ভাই এবং কিছু কথাঃ আহসান উল্লাহ সম্পাদক, দৈনিক জনতা।
বিচ্ছেদ সব সময়ই বেদনাদায়ক। আর সে বিচ্ছেদ যদি হয় চির বিদায়ের। কোনো প্রিয় ব্যক্তিত্বের চির বিদায় ঘটে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে। প্রিয়জনের মৃত্যু আমাদের যন্ত্রণাবিদ্ধ করে। মনকে করে কাতর ও পীড়িত। আমরা সেই বিচ্ছেদের সময় ভুলে যাই মানুষ মরণশীল। জন্ম ও মৃত্যু মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। এটা মানুষের নয় সব প্রাণীর এক অনিবার্য পরিণতি। অমোঘ সত্য। আমার সাংবাদিক জীবনের এককালের সহকর্মী বন্ধু আমির হোসেন সাহেব তার কর্মস্থল ডেইলি সান অফিসে কাজ করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ২০১৭ সালের ৬ মার্চ।

আমির হোসেন সাহেবের সঙ্গে আমার পরিচয় হয় ১৯৬৯ সালে। ১৯৬৬ সালে আইয়ুব-মোনেম আমলে ইত্তেফাক বন্ধ করে দেয় স্বৈর সরকার। ইত্তেফাক প্রেস কনফিসকেট করা হয়। ইত্তেফাক সম্পাদক মানিক মিয়াকে কারারুদ্ধ করা হয়। আমরা ইত্তেফাকের সবাই বেকার হয়ে যাই। আমার মামা শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেন কিছু দিন বেকার থাকার পর সংবাদ সংস্থা পিপিআইতে ব্যুরো চিফ হিসেবে যোগদান করেন। পিপিআইতে প্রায় দুই বছর মতো ছিলেন। সেখানে আমির হোসেন রিপোর্টার ছিলেন। আমির হোসেন এক সময় ইত্তেফাকের মাদারীপুর প্রতিনিধি ছিলেন। আগে থেকেই তাদের দুজনের আলাপ পরিচয় ছিল। পিপিআইতে কাজ করার সময় তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমির হোসেন তার কাজের দ্বারা সিরাজুদ্দীন হোসেনের মন জয় করতে সমর্থ হন। ১৯৬৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ইত্তেফাক পুনঃপ্রকাশিত হলে সিরাজুদ্দীন হোসেন তার পুরনো জায়গায় ফিরে আসেন। তিনি আমির হোসেনকে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। ইত্তেফাক বন্ধ হয়ে গেলে আমি ডেইলি পাকিস্তান অবজার্ভার পত্রিকায় চাকরি পেয়ে যাই। দুই বছর সেখানেই ছিলাম। দৈনিক ইত্তেফাক পুনঃপ্রকাশিত হলে আমিও পুরনো জায়গায় ফিরে আসি। ইত্তেফাকে ১৯৬৯ সালে আমির হোসেন সাহেবের সঙ্গে পরিচয় ঘটে। তবে ঘনিষ্ঠতা তেমন হয়নি। আমি ডেস্কের লোক ছিলাম— সাব এডিটর। আর আমির হোসেন সাহেব ছিলেন রিপোর্টার। ওই সময় ইত্তেফাকের চিফ রিপোর্টার ছিলেন খোন্দকার আবু তালেব। পরবর্তী সময়ে চিফ রিপোর্টার হন তাহের উদ্দিন ঠাকুর। আমির হোসেন তার কাজের দ্বারা এবং আচার-আচরণের দ্বারা সবারই মন জয় করেছিলেন। বার্তা বিভাগের সর্বময় কর্তা এবং তৎকালের শ্রেষ্ঠ বার্তা সম্পাদক সিরাজুদ্দীন হোসেন তাকে বিশেষভাবে স্নেহ করতেন। আমির হোসেন রিপোর্টার হিসেবে মেধাবী ও দক্ষ ছিলেন। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি মাদারীপুর ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। কাজেই তার রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা বেশ প্রখর এবং স্বচ্ছ ছিল। পলিটিক্যাল রিপোর্টগুলো তিনি ভালো লিখতেন। আর বাংলা এবং ইংরেজি দুটো ভাষাই ভালো লিখতেন। বার্তা সম্পাদক সিরাজুদ্দীন হোসেনের একটি উক্তি আমার মনে পড়েছে। কথাটা আমার মনে আছে। কোনো এক প্রসঙ্গে তিনি বললেন, আমির তুই তো আমার থেকে ভালো ইংরেজি লিখিস।

আমির হোসেন সাহেবের রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা স্বচ্ছ ছিল। এর পেছনে তিনি স্কুল জীবনেই রাজনৈতিক দীক্ষা পেয়েছিলেন। তিনি যখন মাদারীপুর ইউনাইটেড ইসলামিয়া হাইস্কুলের ছাত্র, তখন তাদের হেডমাস্টার ছিলেন হামিদ আকন্দ। হামিদ আকন্দ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একনিষ্ঠ ভক্ত এবং তার রাজনৈতিক দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন। জনাব আকন্দ তার প্রিয় ছাত্রদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি সম্পর্কে কথাবার্তা এবং পাকিস্তানীদের শোষণ-নিপীড়ন-বৈষম্য এবং প্রাসাদ চক্রান্তের বিষয়ে ছাত্রদের মধ্যে একটি ধারণা সৃষ্টি করেন। প্রকৃতপক্ষে স্কুল জীবন থেকে আমির হোসেন শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দর্শনে বিশ্বাসী তরুণ রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে গড়ে ওঠেন। এরই ফলশ্রুতিতে আমির হোসেন ১৯৬২ সালে মাদারীপুরের নাজিমুদ্দীন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।

’৬৯-এর গণআন্দোলন, ’৭০-এর নির্বাচন এবং ’৭১-এর ২৫ মার্চের পূর্ব পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অগ্নিঝরা আন্দোলনের দিনগুলোতে আমির হোসেন ইত্তেফাকে প্রচুর রাজনৈতিক রিপোর্ট লিখেছেন। ওই সময়ে তিনি মাঝে-মধ্যে মাদারীপুরে যেতেন। প্রায়ই মাদারীপুর যাওয়ায় ইত্তেফাকের রিপোর্টিং সেকশনের কাজে কিছু ব্যাঘাত সৃষ্টি হতো। এ জন্য চিফ রিপোর্টার তাহের উদ্দিন ঠাকুর অভিযোগ করতেন। ঠাকুর সাহেব অবশ্য আমির হোসেনের মেধা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন। একদিন ঠাকুর সাহেব বার্তা সম্পাদককে বলতে শুনলাম, আমির আরও সিরিয়াস হলে He could excel all the reporters of Dhaka. আমির হোসেন সাহেব ওই সময়টাতে ইত্তেফাকে চাকরি করেও মাদারীপুর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি মাদারীপুরের রাজনীতিতে একজন গরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলে বিবেচিত হতেন। ’৭৩-এর নির্বাচনে মাদারীপুর থেকে তিনিই আওয়ামী লীগের নমিনেশন পাবেন বলে সবাই মনে করতেন। আমির হোসেন মাদারীপুরের অধিবাসী আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতা আবদুর রাজ্জাকের স্নেহভাজন ছিলেন। তিনি ছিলেন আমির হোসেন সাহেবের বড় ভাইয়ের মতো। ওই সময়ে শিবচর নির্বাচনী এলাকায় আমির হোসেনের থেকে জনপ্রিয় নেতা আর কেউ ছিলেন না। তার সততা, অমায়িক ব্যবহার, মানুষকে আপন করে নেওয়ার অসাধারণ ক্ষমতা মাদারীপুরের এক জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত করে। স্কুল জীবন থেকে ভালো ছাত্র এবং ভালো মানুষ হিসেবে এলাকার নারী-পুরুষ-নির্বিশেষে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার মন তিনি জয় করেছিলেন। সবাই জানত ওই নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগ থেকে আমির হোসেনকে নমিনেশন দেওয়া হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে ১৯৭৩-এর সাধারণ নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে নেপেটিজম বা স্বজনপ্রীতি প্রাধান্য পেল। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হলো ইলিয়াস আহমদ চৌধুরীকে। তিনি শেখ ফজলুল হক মণির ভগ্নিপতি এবং বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নিজামাই। ঘটনাটি আমির হোসেনকে একটি বড় ধরনের ধাক্কা দেয়। তার রাজনৈতিক জীবনের আশা ভঙ্গ হয়। এই না পাওয়ার বেদনা তাকে গভীরভাবে মর্মাহত করেছিল। ঘটনাটি তার রাজনৈতিক জীবনে ভবিষ্যতে বৃহত্তর পরিসরে দেশ, জাতি ও জনগণের সেবা করার উজ্জ্বল সম্ভাবনাকে ধূলিসাৎ করে দেয়। এ ঘটনার পরও দলের প্রতি তার আনুগত্যের কোনো ঘাটতি পড়েনি। তিনি আজীবন আওয়ামী লীগের প্রতি অনুগত ছিলেন। ’৭৩-এর নির্বাচনে মনোনয়ন পেলে তিনি হয়তো আর সাংবাদিকতা জীবনে ফেরে আসতেন না। তার মতো সৎ ৎসিদয়বান মেধাবী একজন ভালো মানুষের সেবা থেকে দেশ ও জনগণ বঞ্চিত হয়। ’৭৩-এ মনোনয়ন না পাওয়ার বঞ্চনা তার একার ছিল না। এ ঘটনা তার এলাকার আপামর মানুষের জীবনেও সে বঞ্চনার ছায়াপাত করে। ’৭৫-এর জাতির পিতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর দেশে যে ভয়াবহ পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে তাতে আমির হোসেন সাহেবও বিপদের মধ্যে পড়েন। তার এলাকার প্রতিপক্ষ তার বিরুদ্ধে মামলা দেয় এবং তার ওপর হামলার চেষ্টা হয়। ওই সময় তিনি ভারতে চলে যান। পরবর্তী সময়ে ভারত থেকে ফিরে এসে তিনি সাংবাদিকতাকেই প্রধান পেশা হিসেবে বেছে নেন। সক্রিয় রাজনীতি থেকে তিনি সরে আসেন।

মোহাম্মদ আলী জিন্নার ১৯৪৭ সালের দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ১৪ আগস্ট যে পাকিস্তানের সৃষ্টি হয় সে রাষ্ট্রের সর্বস্তরে পশ্চিম পাকিস্তানি সুবিধাবাদী প্রাসাদ ষড়যন্ত্রকারীদের কুশাসন ও বৈষম্যের কালো থাবা জেঁকে বসে। পূর্ব পাকিস্তান সর্বক্ষেত্রে বঞ্চনা, শোষণ ও বৈষম্যের শিকার হয়। পশ্চিম পাকিস্তানিদের এই অপশাসনের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধারাবাহিক প্রতিবাদ এবং ধাপে ধাপে আন্দোলন ও প্রতিবাদমুখর করে তোলে পূর্ব পাকিস্তানিদের। এ ক্ষেত্রে দৈনিক ইত্তেফাকের একটি বিশাল ভূমিকা ছিল। ইত্তেফাক সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া এবং সিরাজুদ্দীন হোসেনের লেখনী শেখ মুজিবের আন্দোলনের সঙ্গে সমানতালে বাঙালিদের উদ্বুদ্ধ করে প্রতিবাদমুখর হতে। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের অভ্যুদ্বয়ে ইত্তেফাকের সংগ্রামী ভূমিকার নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।

’৭১-এর শুরু থেকে পূর্ব পাকিস্তান অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। ’৭০-এর নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা না দেওয়া, ইয়াহিয়া-ভুট্টোর ষড়যন্ত্র বাঙালিদের মনে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। ৭ মার্চে রমনা রেসকোর্সের বিশাল সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর ভাষণে এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। এ ঘোষণা বাঙালিদের স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আজ বিশ্ব-স্বীকৃতি লাভ করেছে। ইউনেস্কো একে মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এটা বাংলাদেশের একটি বিশাল অর্জন।স্মৃতির আয়নায় অম্লান সাংবাদিক আমির হোসেন

১৯৭১-এর ৭ মার্চের ভাষণের আগের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনার কথা উল্লেখ করব। ঘটনাটা এখন হয়তো কেউই জানেন না বা দু-একজন বিষয়টা জানলেও এটা তাদের মন থেকে হারিয়ে গেছে। ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু রেসকোর্সে গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনামূলক ভাষণ দিতে যাচ্ছেন, এটা সবাই জানত। পত্র-পত্রিকায় এ বিষয়ে লেখালেখি হচ্ছিল। চরমপন্থি ছাত্রনেতারা কেউ কেউ ওই দিন স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। পাকিস্তান রেডিও এই ভাষণ প্রচার করবে না— এরকম একটা সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল। ৭ মার্চের তিন/চার দিন আগে গভীর রাতে ইত্তেফাকের বার্তা সম্পাদক সিরাজুদ্দীন হোসেন আমির হোসেনকে বললেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ রেডিওতে প্রচার হওয়া উচিত এবং দাবিটা এখনই জানানো দরকার। দেখতো নেতাদের কাউকে টেলিফোনে পাস নাকি। পেলে এখনই একটা বিবৃতি নিয়ে দে। আজকেই এটা ইত্তেফাকে যাবে।

আমির হোসেন সাহেব টেলিফোনে রাজ্জাক, তোফায়েল, তাজউদ্দীন এদের যোগাযোগের চেষ্টা করলেন। কিন্তু ওই গভীর রাতে কাউকে পাওয়া গেল না।

সিরাজ সাহেব আমির হোসেনকে বললেন, ‘তুই একটা বিবৃতি এখনই লিখে ফেল। আমির হোসেন তার চেয়ারে বসে ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বেতারে প্রচারের দাবি সংবলিত নিউজটা লিখে ফেললেন। আমির হোসেন তার ঘনিষ্ঠজন যুবনেতা তোফায়েল আহমদের নামে তার পূর্বানুমতি ছাড়াই বিবৃতি ছাপার কথা বললে বার্তা সম্পাদক সিরাজুদ্দীন হোসেন রাজি হয়ে যান। পরদিন বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বেতারে সম্প্রচার দাবি সংবলিত তোফায়েল আহমদের বিবৃতি ছাপা হয়ে যায়।

পুরো কাহিনীটা আমির হোসেনের মুখ থেকে শোনা যাক। “২ মার্চের কথা। রাতের মতো কাজ শেষ করে বাসায় ফিরার আগে সিরাজ ভাইর কাছে গিয়ে বললাম, চলে যাচ্ছি, সব কাজ শেষ।

সিরাজ ভাই একটা নিউজের কপি দেখছিলেন। মুখ না তুলেই বললেন, সাংবাদিকদের কাজ আবার শেষ হয় কী করে? লেখা শেষ হয়ে থাকলে বসে বসে পত্রিকা পড়। ঘরে ফেরার তাড়া কিসের?

আমি বললাম, তাড়া নেই কিছুই। আজকের মতো যা লেখার ছিল শেষ করেছি। তাই যেতে চাইছিলাম।

সিরাজ ভাই চায়ের অর্ডার দিয়ে বললেন, চা খা ক্লান্তি ও ঘুম দুটোই পালাবে।

চেয়ার টেনে বসে পড়লাম।

হাতের কপিটা শেষ করে সিরাজ ভাই বললেন, ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর রেসকোর্সে যে ভাষণ দেবেন সেটা রেডিওতে প্রচার হলে সারা দেশের মানুষ তার বক্তব্য শুনতে পেত। মিটিংয়ে তো লোক আসবে বড় জোর আট দশ লাখ। পত্রিকা পড়ে ধর তার কয়েক গুণ। কিন্তু বাকিরা? সাড়ে ৭ কোটি মানুষের ৭ কোটি শুনতে পাবে না, জানতেও পারবে না তিনি কী বললেন। অথচ ভাষণটা রেডিওতে প্রচারের ব্যবস্থা হলে মুৎসির্তের মধ্যে তা ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে।

আমি বললাম, কিন্তু সেটা হবে কী করে?

সিরাজ ভাই বললেন, হতে পারে। দেখ না চেষ্টা করে। চা খেয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের ধর। বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা রেডিওতে প্রচারের দাবি জানিয়ে একটা বিবৃতি ছেপে দেই। দেখা যাক কিছু হয় কিনা। বিবৃতিটা তুই-ই লিখে ফেল। শুধু কনসেন্টটা নিয়ে নে।

তখন রাত ১২টা পেরিয়ে গেছে। চা খেতে খেতেই টেলিফোন করা শুরু করলাম। তাজউদ্দীন সাহেব থেকে শুরু করে যাকেই ডায়াল করি, হয় ঘুমে না হয় বাইরে। আওয়ামী লীগের বিশিষ্ট কোনো নেতাকেই পেলাম না। বললাম, কাউকেই পাচ্ছি না, কালকে চেষ্টা করে দেখব!

সিরাজ ভাই বললেন, সময় চলে যাচ্ছে। দেরি করা ঠিক হবে না। কী করা যায় বলত?

আমি বললাম, বিবৃতিটা তোফায়েল আহমেদের নামে হলে যদি চলে, ছেপে দেই। কালকে তাকে সব খুলে বললেই হবে।

সিরাজ ভাই রাজি হলেন। আমি তখনকার যুবনেতা তোফায়েল আহমেদের নামে একটা বিবৃতি তৈরি করে দিলাম। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ রেডিওতে সরাসরি প্রচারের দাবি সংবলিত সেই বিবৃতি পরদিন ইত্তেফাকে ছাপা হলো।

সে দিনই বিকালে তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে দেখা আওয়ামী লীগ অফিসে। আমাকে দেখেই তিনি বললেন, আমি বুঝতে পেরেছি বিবৃতিটা আপনিই ছেপে দিয়েছেন। সারা দিন বিভিন্ন পত্রিকার লোকজন অনুযোগ করেছে, বিবৃতিটা শুধু ইত্তেফাকে পাঠালেন কেন? আমরা কেন পেলাম না ইত্যাদি। বাধ্য হয়ে বলতে হয়েছে অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল তাই আর সব পত্রিকায় পাঠানো সম্ভব হয়নি।

বঙ্গবন্ধু অফিসেই ছিলেন। তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে অফিসে ঢুকতেই বঙ্গবন্ধু হাসতে হাসতে বললেন, আমির, তোর বিরুদ্ধে তোফায়েলের নালিশ আছে। তার অনুমতি ছাড়া তুই নাকি তার নাম জাল করে বিবৃতি ছেপেছিস ইত্তেফাকে।

আমি বললাম, যা করেছি গুড ফেইথে করেছি এবং সিরাজ ভাইর নির্দেশে করেছি। সুতরাং এ নালিশে আমি ঘাবড়াইনি।

স্মৃতির আয়নায় অম্লান সাংবাদিক আমির হোসেন

বঙ্গবন্ধু বললেন, খুব ভালো করেছিস। এটা আরও আগেই করা উচিত ছিল। ওরা হয়তো খেয়ালই করেনি। সিরাজ এসব ব্যাপারে খুব সজাগ। এ জন্যই আমি তার ওপর এত ভরসা করি। কেমন আছেরে ‘লাল মিয়া’?কলকাতায় ইসলামিয়া কলেজে তরুণ শেখ মুজিব ও সিরাজুদ্দীন হোসেন সহপাঠী ছিলেন। দুজনেই বেকার হোস্টেলে থাকতেন। সেখানে দুজনের মধ্যে যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে, তা সারা জীবন অক্ষুণ্ন থাকে। দুজনেই হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ভাবশিষ্য ও অনুসারী ছিলেন। তাদের দুজনের বন্ধুত্বের সুবাদেই বঙ্গবন্ধু সিরাজুদ্দীন হোসেনকে ‘লাল মিয়া’ বলে ডাকতেন। বঙ্গবন্ধু বললেন, তোফায়েলের বিবৃতিটা তোরা ভালোই ছেপেছিস। আজ এ ব্যাপারে তাজউদ্দীনের বিবৃতি যাচ্ছে পত্রিকায়। পরদিন পত্রিকায় তাজউদ্দীন আহমদের বিবৃতিটি প্রকাশিত হয়। ৭ মার্চের ভাষণ রেডিওতে সরাসরি প্রচারের দাবি ক্রমশ এমনই জোরালো হয়ে ওঠে যে, কর্তৃপক্ষ এ দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়। আজ আমির হোসেন সাহেব আমাদের মাঝে নেই; কিন্তু তার স্মৃতি কিছু মানুষের মনে অম্লান হয়ে বিরাজ করছে। জীবদ্দশায় তিনি দেশের ও দশের কল্যাণ কামনা করেছেন, কল্যাণে কাজ করেছেন। তার সহজ-সরল জীবনযাত্রায় মানুষের উপকার করার মানসিকতা ও বিপদে-আপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে অকৃত্রিম ইচ্ছা আজকের দিনে বিরল। আমির হোসেন সাহেবের মধ্যে নিজেকে আড়াল করে রাখার একটা মানসিকতা কাজ করত বলে আমি মনে করি। এ কারণেও তার পরিচিতি এবং মেধা, যোগ্যতা অনেকটা লোকচক্ষুর অগোচরে থেকে গেছে। তার স্মৃতি, তার সুকৃতি শুকতারার মতো অম্লান হয়ে আমাদের ৎসিদয়ে বিরাজ করছে। তার জীবনে না পাওয়ার বেদনা ছিল, তার যোগ্যতার ও মেধার যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি—এ কথা আমি বিশ্বাস করি। তার মৃত্যুর পর তার কিছু কিছু নিকটজন এটা বিশ্বাস করেন।

লেখক : সম্পাদক, দৈনিক জনতা।

Thursday, April 26, 2018

এক নিবেদিত ছাত্রলীগ কর্মীর আত্মকথাঃ

এক নিবেদিত ছাত্রলীগ কর্মীর আত্মকথাঃ
************************
"সুসময় অনেকেই বন্ধু বটে হয়; দুঃসময়ে হায় হায় কেহ কারো নয়"

কবি কেন এমন মর্মবেদনাহত জ্বালাময়ী কবিতা লিখেছিলেন, জানা নেই। হয়তো কবির জীবনেও এমন ঘটনা ঘটেছিল এবং অন্তরাত্মাকে দহন করেছিল প্রচন্ডভাবে তাই তিনি লিখেছিলেন এ অমর কবিতা।
সাইফুর রহমান সোহাগ-গরবিত পিতার গর্বিত সন্তান। মাদারীপুরের কৃতি ছাত্রলীগ কর্মী থেকে ছাত্রনেতা।

এ ছাত্রলীগ নেতা কারো দয়া দাক্ষিণ্যের ফসল নয়; এ মহান দায়িত্ব এমন কি জননেত্রী শেখ হাসিনা সোহাগকে করুনা দয়া মায়া মমতাবোধ বা স্বজনপ্রীতির দলিল হিসেবে প্রদান করেন নি। নিজের কর্ম স্পৃহা ন্যায় সত্য সততা নিষ্ঠা এবং কঠিন শ্রমের মর্যাদা হিসেবে কাউন্সিলের সিদ্ধান্তানুযায়ী বাংলাদেশের সুপ্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যময় গর্বিত মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগের প্রজন্মের তরুন মেধাবী ছেলে/মেয়েদের নিয়ে গঠিত ছাত্রলীগের কর্ণধার হতে পেরেছিল আজকের কথিত ভিত্তিহীন অহেতুক বানোয়াট মিথ্যা প্রপাগেশন/ দুর্নামের বোঝা চাপানো সময়ের সব চেয়ে সফল ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমান।
আমি মাদারীপুরের ছেলে বলে বা সোহাগ অতি নিকটের বলে কোন চাটুকারিতা বা অহেতুক অঢেল প্রশংসা করে সোহাগের নিকট প্রিয় হবার কোন বাসনায় এ লেখাটি লিখছি না। সোহাগের সুসময়ের ফল যারা পেট ভরে খেয়েছে সে সকল ছাত্রলীগ নেতা কর্মী ছেলে মেয়েরা আজ সোহাগের বিরুদ্ধে কঠিন চক্রান্ত ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কেউ কেন একটি প্রতিবাদ করেনি; সে বিষয়টি আমাকে গভীর ভাবে ভাবিয়ে তুলেছে; লিখতে চাইছিলাম না। কারন এখন সোহাগের পক্ষে কথা বলতে গেলেই আমার নিজস্ব একান্ত কিছু বন্ধু বান্ধব ফেসবুক ভক্ত বা ছাত্রলীগ নেতা কর্মী অনেক যুক্তি দেখাবেন। রাজাকার পুনর্বাসনের কাহিনী গল্প দিয়ে সোহাগের জীবনের সকল অবদানকে কলুষিত করবেন। তাই বলার সাহস পাচ্ছিলাম না। Image may contain: 1 person, closeup and outdoor
কিন্তু সম্প্রতি বানোয়াট ভিত্তিহীন মিথ্যে তথ্য সম্বলিত একটি অজনপ্রিয় অনলাইন পত্রিকায় সোহাগের সাথে তারেক রহমানের আর্থিক লেন দেন বা গোপন আঁতাত সংক্রান্ত ইস্যুটি আমাকে চুপ থাকতে দেয়নি। আমি স্পষ্ট ভাষায় কথা বলি এবং সে বলার কারনে অনেক নেতা সাংসদ মন্ত্রীই আমাকে দেখতে পারেন না; এ কথা আমার ফেসবুকের ফলোয়ারের সংখ্যা হ্রাস পাওয়া থেকে এবং আমার লেখা "লাইক" না করার অভিজ্ঞতা থেকেই সহজে অনুমান করতে পারছি।
কিন্তু আমি তো ঐ সেই পাগল মুক্তি। যা' সত্য তাই বলি, কেউ লাইক করে বা না করে তাতে আমার প্রতিদিনের বাজার এবং খাবার বন্ধ হয়ে যাবে না ইনশাহ আল্লাহ।
সোহাগ আমার দু'পয়সার উপকার করেনি কোন দিন। কারন আমি যাইনি । কিন্তু সোহাগের জন্য আজ আমার বড় কষ্ট হচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে সোহাগ সভাপতি হবার পর থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সকল কাজগুলো বিগত বছরের থেকে অনেকটা সফল বলেই খোদ বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার দ্বারাও প্রচন্ডভাবে ভূয়সী প্রশংসা পেতে সক্ষম হয়েছে এই সোহাগ জাকির পরিষদ।

মফস্বল কমিটি/স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শাখা কমিটিতে কি ভাবে স্বাধীনতা বিরোধী জামাত শিবির বা বি এন পি'র ছেলে মেয়েরা ঢুকে পড়েছে; সেটা শুধু কি ছাত্রলীগ যুবলীগেই ঘটেছে? না এ ক্ষেত্রে জাতির গুরু দায়িত্বপ্রাপ্ত খোদ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই জগা খিচুড়ি হয়েছে।
দেশে প্রবাসে সকল কমিটিগুলো আজ ন্যাপ জাসদ বাসদ কমিউনিস্ট জামাত বি এন পি ডানপন্থী বামপন্থী দিয়ে ভরিপুর এক তেতুলের টক ঝাল মিষ্টি জাতীয় হাই ব্রীড আওয়ামী লীগ হয়ে দাঁড়িয়েছে । ফলে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনা , আওয়ামী লীগ বিশেষ করে মহা সংকটের দিনে রাজপথের লড়াকু নিবেদিত কঠিন শিলায় পরিনত হওয়া তৃণমূল নেতা কর্মীরা আওয়ামী লীগ যুবলীগ সেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ থেকে খোভে দুখে অভিমানে দূরে বহু দূরে সিটকে পড়েছে। এর জন্য শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, সোহাগ জাকিরদের দোষ দিলেই কি দায়িত্ব শেষ হয়ে গেল বা সমাধান হয়ে গেল সকল জটিল দুর্নীতির অপবাদ?
জাকিরকে সোহাগ ব্যক্তিগত বন্ধু হিসেবে দলের সাধারন সম্পাদক করার কোন ক্ষমতা রাখে কী? কাউন্সিল ও দলীয় সিদ্ধান্তই একজন সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক তৈরী করে। এখানে জাকিরের অতীত নিয়ে আমিও লিখেছিলাম। কিন্তু সে জন্য সোহাগ কে কলংকিত করে কেন তার সততা নিষ্ঠা এবং ছাত্রলীগকে সুসংগঠিতভাবে ঐক্যবদ্ধ করে তোলার সকল প্রশংসা থেকে বঞ্ছিত করে ভিত্তিহীন মিথ্যা বানোয়াট গল্প কাহিনী দিয়ে কলুষিত করা হচ্ছে? আমার বোধগম্য হচ্ছে না।

"সব মাছেই বিষ্ঠা খায়, নাম পড়ে বোয়াল মাছের"

সোহাগ কোন হতদরিদ্র্য ঘরের ছেলে নয়। ছাত্রলীগ নেতা হবার অনেক আগে থেকেই যার পারিবারিক পরিচয় মাদারীপুরের সকল সম্ভ্রান্ত পরিবারগুলোর মধ্যে অন্যতম। সোহাগ ছ্যাড়া গেঞ্জি গায় দিয়ে ভাংগা স্যুটকেস মিডিয়াকে দেখিয়ে বলেনি যে আমি ফকিন্নি ছাওয়াল। সোহাগ মাদারীপুরের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান, সোনার চামচ মূখে নিয়ে জন্মানো ধনি পরিবারের একজন সদস্য যার বাড়ীতে শিশুকাল থেকেই দুই/চারজন চাকর/চাকরানী দেখে বড় হওয়ার অভ্যাস, যার বড় ভাই সুইডেনে বসবাসরত একজন প্রবাস আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত এবং সোহাগের পরিবার ঠিক মাদারীপুরের আওয়ামী রাজনীতির কিংবদন্তি বঙ্গবন্ধুর সহকর্মী মরহুম এডভোকেট মৌলভী আচমত আলী খানের সম্ভ্রান্ত পরিবারের চেয়ে কোন অংশে কম নয়।
সুতরাং বন্ধুগণ, আগে সঠিক তথ্য জেনে নিন এবং তদন্ত করুন তারপরে সোহাগ কে নিয়ে কঠোর সমালোচনা করুন। সোহাগের সারা জীবনের কঠিন কর্মের সফলতাকে এভাবে ধুলায় লুন্ঠিত করে ছাত্রলীগের ঐতিহ্যকে কলংকিত ও কলুষিত না করার জন্য সকলের নিকট একজন মুক্তিযোদ্ধা মুজিবসেনা হিসেবে সবিনয় নিবেদন করছি।
*******************************************
জেনে নিন ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের জীবনী

ছাত্রলীগ-সোহাগসাইফুর রহমান সোহাগ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের ২৮তম নির্বাচিত সভাপতি। তিনি ২৬ জুলাই ২০১৫ ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনে ৩ হাজার ১৩৮ ভোটের মধ্যে ২ হাজার ৬৯০ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উর্বর ভূমি খ্যাত মাদারীপুরের একটি আওয়ামী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালনকারী ছাত্র সমাজের এ নেতা।

আওয়ামী রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করার কারণে রাজনৈতিক গুণাবলি তার মধ্যে ছোট বেলা থেকেই লক্ষ্য করা গেছে বলে জানান তার ঘনিষ্ঠ সহচর মোহাম্মদ ইমরান খান। এইবেলা ডটকমের পাঠকদের বিপুল চাহিদার কথা মাথায় রেখে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের পূর্ণাঙ্গ জীবন বৃত্তান্ত নিচে দেওয়া হল।

জন্ম: ১৯৮৬ সালের ৩১ আগস্ট মাদারীপুর জেলার দক্ষিণ দুধখালি ইউনিয়নের আদর্শ শিক্ষক এইচ এম আবদুর রহমান (কর্মক্ষেত্র: চন্দ্রপুর এ এইচ পি উচ্চ বিদ্যালয়, চন্দ্রপুর, শরীয়তপুর।) ও সমাজ সেবী মর্জিনা খানম (পেশা: অবসরপ্রাপ্ত পরিবার কল্যাণ সহকারী, কর্মক্ষেত্র: মাহমুদপুর ইউনিয়ন, শরীয়তপুর।) ঘরে জন্ম নেন বর্তমান সময়ের লাখো ছাত্রের অভিভাবক সাইফুর রহমান সোহাগ। তিনি তিন ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়।

সাইফুর রহমান সোহাগের পারিবারের রাজনৈতিক পরিচয়: সাইফুর রহামান সোহাগের বড় ভাই মাহবুবুর রহমান সোহেল সুইডেনের লিনিয়াস ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করেছেন। তিনি সুইডেন সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক।

সাইফুর রহমান সোহাগের আরেক ভাই আরিফ হোসেন সুমন সুইডেন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার নানা মরহুম আব্দুল গনি মাতবর ছিলেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি। বর্তমানে তার মামা আনোয়ার মাতবর ওই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি। সাইফুর রহমান সোহাগের চাচা ডা. রেজাউর আমিন মাদারীপুর জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক।

সোহাগের শিক্ষা জীবন: সাইফুর রহমান সোহাগ মাদারীপুর ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০০২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৩.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। তখন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে চতুর্থ বিষয়ে (অপসনাল) নম্বর যোগ হতো না। উল্লেখ্য, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী থাকাকালীন সময়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন। এক কথায় বলতে গেলে এ বিদ্যালয়টি এখন বাংলার ইতিহাসে থাকা বিদ্যালয়গুলোর একটি।

মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোনোর পর সরকারী নাজিমুদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে মানবিক বিভাগে ভর্তি হন তিনি। ২০০৪ সালে ঢাকা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাফল্যর সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। এ নাজিমুদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অধ্যয়নকালেই ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন সাইফুর রহমান সোহাগ।

উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রথম বছরেই তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং পরবর্তী বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাই নিজের মেধার স্বাক্ষর রাখেন।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষে ভাষা বিজ্ঞান স্নাতক সম্মানের শিক্ষার্থী। তিনি ভাষা বিজ্ঞান থেকে সাফল্যের সঙ্গে সম্মান শেষ করেন ২০০৯ সালে। ২০১০ সালে স্নাতকোত্তর শেষ করার পর পরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স করছেন। পাশাপাশি বিদেশী ভাষার প্রতি আগ্রহ থাকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে বিশ্ববিদ্যালয় জাপানিজ ভাষা কোর্সে অধ্যয়ন করছেন।

সাইফুর রহমান সোহাগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড:
১. ২০০২-২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে, মিছিল মিটিং-এ নাজিম উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী।
২. ১/১১(এক এগার-তে গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনের সময় বিক্ষোভ মিছিলে এবং মানববন্ধন ও কালো পতাকা প্রদর্শন এবং বিভিন্ন ঘরোয়া আলোচনায় একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে অংশগ্রহণ।

৩. সাবেক সক্রিয় কর্মী সরকারী নাজিম উদ্দিন কলেজ ছাত্রলীগ এবং ১/১১ তে দেশরত্ম শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনের স্বীকৃতি স্বরূপ সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে জিয়া হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করা।
৪. জিয়া হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন কালে সাধারণ ছাত্রদের দাবি আদায়ে সক্রিয় থেকে সফলভাবে জিয়া হল ছাত্রলীগকে সংগঠিত করা।

৫. প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত গণশিক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে দুটি স্কুল (পথশিশুদের জন্য) সফলতার সাথে পরিচালনা করা। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর উপর বিভিন্ন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ ছাত্রদের নিয়ে পাঠচক্র পরিচালনা করা ।
৬. পরিবেশ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে সারা বাংলাদেশের ৫০ এর অধিক জেলা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পাদন ও পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন সভা ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করা।
৭. জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলনের সকল কর্মসূচিতে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করা।
৮. জামাত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিতে ও হেফাজতের নৃশংসতার বিরুদ্ধে সর্বদা সক্রিয় অংশ গ্রহণ করা।
৯. ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালের নির্বাচনের পূর্ব ও পরে বিএনপি-জামায়াতের অপকর্মের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ ঘোষিত সকল কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে চলমান গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনের অগ্রসৈনিক হিসেবে অংশগ্রহণ করা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকেবুকে ধারণ করে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হিসেবে আমি সর্বদা প্রস্তুত থাকা।
১০. সর্বশেষ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৮ তম জাতীয় সম্মেলনে নির্বাচনের মাধ্যমে বিপুল ভোটে সভাপতির দায়িত্ব পালন (চলমান)।

ছাত্রলীগ সভাপতি হওয়ার আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত পদ:
সাইফুর রহমান সোহাগ ছাত্রলীগ সভাপতি হওয়ার আগে সংগঠনের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। একই সঙ্গে বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতা ছিলেন। বিএনপি-জামাত শাসনামলে ছাত্রলীগের দুঃসময়ের কর্মী হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করে ২০০৯ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়া হলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ।

রাজনৈতিক উদ্দেশ্য: সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের জন্য উদ্দেশ্য থাকা জরুরি। সেক্ষেত্রে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগেরও কিছু উদ্দেশ্য রয়েছে।

সাইফুর রহমান সোহাগের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিম্ন রুপ:
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গঠনে ছাত্র সমাজকে শিক্ষা শান্তি প্রগতির পতাকাতলে এনে গণতন্ত্রের মানসকন্যা বিশ্বশান্তির অগ্রদূত বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা। দেশ ও জাতির অর্থনৈতিক ও গণতন্ত্রের মুক্তি, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা, অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে জননেত্রী দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করা।

Sunday, April 22, 2018

সৈয়দ আবুল হোসেন ও কালকিনিবাসীর প্রত্যাশা

জবাবদিহি সৈয়দ আবুল হোসেন করবেনা, করবে খালেদা ইউনুস, হিলারী ক্লিনটন; যে কারনে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ পিছিয়ে গিয়েছিল। গোটা আওয়ামী লীগ সরকারকে জাতি সংঘ, বিশ্ব ব্যাংক ও কানাডার নিকট হেয় প্রতিপন্ন করার মহা ষড়যন্ত্রের গ্যারাকলে মন্ত্রীত্ব অস্তিত্ব মান সন্মান তথা মাদারীপুর কালকিনিবাসীর আগামী দিনের সোনালী স্বপ্ন ভেঙ্গে চৌচির করে দেয়া হয়েছিল। আজ সময় এসেছে সৈয়দ আবুল হোসেনের ন্যায্য বিচার পাবার। বঙ্গবন্ধু তনয়া সে সুবিচার প্রতিষ্ঠা করবেন ইনশাহ আল্লাহ। ফিরিয়ে দেবেন আমাদের সন্মানিত সাংসদের পদবী ও মন্ত্রীত্ব। আমরা কালকিনিবাসী জাতিরজনকের আদর্শ স্বপ্ন ও চেতনায় উদ্ভাসিত চির বঞ্চিত অবহেলিত লাঞ্ছিত শোষিত অত্যন্ত গ্রাম্য কৃষক শ্রমিক তাতী জেলে বনিক ধনিক হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিষ্টান আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গভীর আশায় বিশাল প্রত্যাশার বাসনা বক্ষে লালন করে বেচে আছি।
আমরা আমাদের কালকিনির পবিত্র মাটিতে জন্ম নেয়া সৈয়দ আবুল হোসেন কে এবারো নৌকার কান্ডারী-মাঝি হিসেবে পেতে চাই।
আমরা বিদেশী কোন ভাড়াতে লুটেরা দুর্নীতিবাজ চাঁদাবাজ নেতা কালকিনির মাটিতে দেখতে চাইনা।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
জয় হোক কালকিনিবাসীর
জয় হোক দেশরত্ন শেখ হাসিনার
মোকতেল হোসেন মুক্তি
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জাতীয় কন্ঠশিল্পী

নেতা আপমান করেছে, শেখের বেটি আদর করেছে

নেতা আপমান করেছে, শেখের বেটি আদর করেছে, সূতরাং আগামী দুঃসময়ে শেখ হাসিনার সাথেই থাকুন, সময় বদলে যাবে ইনশাহ আল্লাহ। the leader has insulted you, not daughter of bangabandhu, stay with sheikh hasina on upcoming disasters of the nation, awami league and the country.

শেখ হাসিনা জোর দিয়েই বলেছেন "নেতারা বেঈমানী করে, কর্মী করে না; অর্থাৎ অবহেলিত হলেও কর্মীদের দেশরত্ন কখনোই অবজ্ঞা তাচ্ছিল্য করেননি।

the sorrowfulness of azim rony student leader of chittagong

রনি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে কেউ রাজনীতি চর্চা করোনা।সর্বোচ্চ ‘রনি’ চরিত্রটি যে কোন গল্প,কবিতা অথবা উপন্যাসে ঠাঁই দিতে পারো।কারন বাস্তবতা অনেক কঠিন,অনেক বেশী দূর্গম।’রনি’দের স্বপ্ন পূরন হবেনা এ সমাজে।যে কলেজগুলোতে প্রগতির পতাকা উত্তোলনের পর একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হবে স্বপ্ন দেখেছিলাম সে কলেজগুলোর জন্য পাবলিক দূর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে।দায়ী কে?রনি নাকি রনি বিরোধীরা?শিক্ষা আন্দোলনের পতাকা উড়িয়ে রনি’রা পেয়েছি চাঁদাবাজির খেতাব।অথচ শিক্ষা বানিজ্যে নিয়োজিতরা দাঁত খেলিয়ে হাসছে এই নগরের লুটভবনগুলোতে।মাঠ রক্ষার আন্দোলনে গিয়ে রনি’রা হয়েছে পুলিশের গুলিতে বুলেটবিদ্ধ,হয়েছে বাঁশ রড চুরি মামলার আসামী।আর মাঠ খেকোর নাম হয়েছে বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক ডট ডট ডট গোস্বামী চন্দ্রবিন্দু।মানবতার উদাহরন তৈরী করতে গিয়ে রনি’রা হয়েছে প্রতারকের হাতে পরাজিত,এতেও সার্বিক সহযোগিতায় একই মোস্তাক চক্রবর্তীরা।


রনি’দের স্বপ্নগুলো কাজী নজরুল অথবা রবীন্দ্রনাথের হাতেই স্বার্থকতা পেয়েছে বারবার।এদেশের কোন দলের কোন রাজনৈতিক নেতা রনি’দের স্বপ্ন পূরনে এগিয়ে আসেনি।মানবকন্যা শেখ হাসিনা দেশের ভাগ্য উন্নয়নে একক নৈপুন্যে কাজ করলেও নিজ দল ও অন্য সব দলের নেতারা রনি’দের দমন পীড়নে সবচেয়ে বেশী ভূমিকা রাখছে।
তাই পরিশেষে বলছি রনি হওয়ার স্বপ্ন দেখে নির্ঘূম রাত্রীযাপন সব দিক থেকেই ক্ষতিকর।এই যে দেখছো,জ্যান্ত নূরুল আজিম রনি আমি,

দিনশেষে মিথ্যা অপবাদে ৫ টি ফৌজদারী মামলা,২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড আর পকেটে ৭২ টাকা নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়িয়েছি।

আমি রনি জেনে শুনে বুঝেই আত্মঘাতি হতে এ পথে এসেছি।জলজ্যান্ত আমি নূরুল আজিম রনির স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হলেও এসবের বিরোধিতা কারীদের মুখোশ উন্মোচনের জন্য আমার জন্ম হয়েছে।
এ লড়াই চলুক,চলবে....

Saturday, April 21, 2018

কালকিনির মানুষ

5 minsMale
১৯৯৬ টার্মে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দেবার পরেও আমার সচিবালয়ের চাকুরীটি এবং মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম আসেনি এই লুটেরা আফম বাহাউদ্দিন নাসিমের কারনে। নাসিম আমাকে নেত্রীর সাথে কথা বলতে দেয়নি। নেত্রী আমাকে প্রশ্ন করলেন আপনার বয়স কত? আপনি কোথায় যুদ্ধ করেছিলেন? ১৯৯৬ সালে গোপালগঞ্জের কমান্ড কাউন্সিল ও মাদারীপুরের আমার কয়েকজন সহযোদ্ধাদের নিয়ে নেত্রীর সাথে দেখা করেছিলাম। এই আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম ছিল নেত্রীর এ পি এস। আমার কথা শেষ করতে দেয়নি এই বিশ্ব লুটেরা বাহাউদ্দিন নাসিম। আমার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বললঃ আপনি এখানে এসেছেন কেন? সৈয়দ আবুল হোসেনের নিকট যান? আমার হাতে বঙ্গবন্ধু ৪টি এলবামের ক্যাসেট দেখে বললেন-আপনি শিল্পী গান করেন-রেডিও টিভিতে যান, এখানে কেন এসেছেন?Image may contain: M Farid Hossain Howlader, closeup and outdoor
বন্ধুরা প্রশ্ন আপনাদের নিকটই আমি কেন শেখ হাসিনার নিকট গিয়েছিলাম? কারন আমরা বেহায়া বেশরম বেগারদ তাই?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন-তুই চুপ কর! হ্যা আপনি বলেন- এর মধ্যেই আমার হাত থেকে কাগজগুলো বাহাউদ্দিন নাসিম নিয়ে গেল। বাস কিসস্যা ওখানেই শেষ। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মরহুম বজলুর রহমান, বজলু ভাই আমাকে ডেকে নিয়ে ১০ হাজার টাকার অনুদান ভিক্ষার কথা লিখতে শুরু করলেন। আমি রাগে ক্ষোভে দুখে হতাশায় চলে এসেছিলাম।
আরো অনেক বড় বড় বিশাল রহস্যজনক গল্পও শুনাবো শুনবেন । হ্যা ভাই আমার বাড়ী কালকিনি৩ আসনের বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের খাসের হাট। কাজেই বাহাউদ্দিন নাসিমের সাথেও নোমিনেশন পেলে দেখাতো হবেই- বক্তৃতাও হবে-গানও হবে- হয়তো সে গান হবে নাসিম বিরোধী গান। কারন খাসের হাট আমার। বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন আমার। প্রয়োজনে বাহাউদ্দিন নাসিমের বিরুদ্ধে স্বতন্দ্র নির্বাচনও করতে পারি। আমি শিল্পী আমার টাকা লাগবে না। কালকিনির মানুষ আমার আর নকুল কুমারের গানের পাগল। গান দিয়েই ১২ টা বাজাতে পারবো।

মাদারীপুর তিন, তাক ধিনা ধিন ধিনঃ


মাদারীপুর তিন, তাক ধিনা ধিন ধিনঃ

১। ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান গোলাপ; সাহেবরামপুর/রমজানপুর ছাড়া কেউ চিনে না;

২। শিবির নেতাকে কালকিনি পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি করেছে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম; বড় অংকের টাকায় বিক্রয় করেছে ইউনিয়নের নৌকার টিকেট;

৩। সৈয়দ আবুল হোসেন???????????????? বোকা, শুধু জাতিকে শিক্ষিত করে তোলার জন্য কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ইত্যাদি করে বেড়াচ্ছেন; অশিক্ষিত মূর্খ বাঙ্গালী জাতিকে শিক্ষিত জাতি হিসেবে গড়ে তুলছেন নিজের এন জি ও'র অর্থে । হোক সে জাতীয় অর্থ জনগণের অর্থ! সবাই নৌকায় বসে জনগণকে চুষে খায় আর সৈয়দ আবুল হোসেন নৌকায় বসে জনগণকে অর্থ সম্পদ দান করেন; এখানেই রাত ও দিনের ব্যবধান। বিচার বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা ও মাদারীপুর কালকিনি ৩ আসনের জনগণ করবেন।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু  

Saturday, November 11, 2017

শেখ মুজিবের ছাত্রজীবন

আদর্শ ও দেশপ্রেমের প্রতিকৃতি।

  • শেখ মুজিবের ছাত্রজীবন : আদর্শ ও দেশপ্রেমের প্রতিকৃতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবনের স্বপ্ন ছিল বাংলার স্বাধীনতা ও বাঙালির জাতিসত্তার প্রতিষ্ঠা। শৈশব কৈশোর থেকে তিনি এই আদর্শ নিয়েই বড় হয়ে ওঠেন। নিজেই নিজেকে প্রস্তুত করে তোলেন। তাঁর এই চারিত্রিক দৃঢ়তার পেছনে ছিল গভীর অধ্যয়ন, জানা-চেনা-শোনা ও দেখার গভীর অন্তর্দৃষ্টি। তিনি হৃদয়ের আবেগকে যথেষ্টভাবে ধারণ করতে সমর্থ হন। এর পেছনে ছিল মানুষকে ভালোবাসা ও সাহায্য করার জন্য তাঁর দরদী মন। এই শিক্ষাটা তিনি অর্জন করেন তাঁর পরিবারের মানুষদের দেখে, তাঁর গৃহশিক্ষকের কাছে এবং দারিদ্র অভাবগ্রস্থ গ্রামের মানুষকে দেখে। তাঁর হৃদয়ে যা কিছু ছাপ রেখেছে বা প্রভাব ফেলেছে সেটা তিনি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। এই ক্ষমতা অল্প বয়স থেকেই তাঁর আয়ত্তে ছিল। তাঁকে চিন্তাচ্ছন্ন করে তুলতো, তাঁকে আবেগতাড়িত করতো। তাঁর জাতির পিতা বা বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার পেছনে তাঁর গ্রাম টুঙ্গিপাড়ার মানুষের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। এই ছোট্ট অনুন্নত গ্রাম ও মানুষের মধ্যে তিনি লক্ষাধিক গ্রাম ও কয়েক কোটি মানুষকেও দেখেছেন। আর সেজন্যই বাঙালি জাতির ভাগ্যকে তিনি জয় করতে গিয়ে তিনি নিজের জীবনের প্রতি তাকিয়ে দেখার সুযোগ পান নি। জেল-জুলুম, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, শাসকগোষ্টীর অত্যাচার– সবকিছু সহ্য করেছেন। কিন্তু বাংলার মানুষের সঙ্গে কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। তাঁর লক্ষ্য ছিল বাংলার মানুষের মুক্তি। বাঙালি উন্নত জীবনের অধিকারী হোক। বিশ্বে মাথা উচু করে দাঁড়াক। বাঙালি জাতিসত্তাকে প্রতিষ্ঠা করুক। একজন মহান নেতা হবার সবকটি গুণই আমরা তার মধ্যে খুঁজে পাই। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবের জন্ম হয়। মা-বাবার চোখের মণি, ভাই-বোনের আদর ভালোবাসা, আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশি সকলের কাছেই ছিল তার সমাদর। গ্রামের মাটি-আলো-বাতাসের স্পর্শ নিয়ে প্রকৃতির শান্ত শীতল সবুজ ছবিটি দেখে তিনি বড় হয়ে উঠলেন।
    গিমাডাঙ্গা প্রাইমারি স্কুলে লেখাপড়া করেন। বাড়িতে লেখাপড়ার জন্য শিক্ষক, মৌলভী ও পণ্ডিত ছিলেন। গ্রাম থেকে গোপালগঞ্জ শহরে এসে মিশন স্কুলে ভর্তি হন। পিতা ছিলেন গোপালগঞ্জ দেওয়ানী কোর্টের সেরেস্তাদার। স্কুল ছাত্রজীবনেই তাঁর চোখে বেরিবেরি রোগ হওয়ায় কলকাতায় গিয়ে ডা. টি. আহমদের কাছে অস্ত্রপচার করতে হয়। দুই বছর লেখাপড়া বন্ধ ছিল। এ সময়টায় তিনি ঘুরে বেড়াতেন, সভায় গিয়ে বক্তৃতা শুনতেন, গৃহশিক্ষকের কাছে অনেক কথা কাহিনী ও খবরাখবর শুনতেন। সুস্থ হওয়ার পর তিনি আবার স্কুলে ভর্তি হন, খেলাধুলায়ও মনোযোগী হন। ফুটবল ছিল প্রিয়। স্কুলের দলের হয়ে খেলতেন। লেখাপড়া করতেন ঠিক মত, কেননা তাঁর মা-বাবার প্রচন্ড উৎসাহ ছিল এবং তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছিল, শাসনও ছিল। তাঁর গৃহশিক্ষক কাজী আবদুল হামিদ ছিলেন একজন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের কর্মী যিনি আত্মগোপন করতে তাদের বাসায় আশ্রয় নেন। সেই শিক্ষকই শেখ মুজিবের জীবনকে আলোকিত করার প্রথম প্রদীপটি জ্বালান। তিনি তাঁকে ইতিহাসের শাসকদের গল্প শোনান। বিপ্লব-বিদ্রোহের কাহিনী শোনান। বাংলার ইতিহাস কিশোর মুজিবের কাছে ছিল এক আদর্শময় পাঠ। বাঙালির কৃতিত্ব, শিল্প–সাহিত্য-সংস্কৃতির জ্ঞানও তিনি ধীরে ধীরে গ্রহণ করেন। এই শিক্ষা গ্রহণ করার পাশাপাশি সেই সময়ের বৃটিশ শাসকদের শাসন ও শোষণ, গান্ধিজীর আন্দোলন, হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক, রাজনৈতিক আন্দোলন, সামাজিক সমস্যাবলী, বন্যা-দুর্ভিক্ষ, খাদ্যাভাব – সবই তিনি তাঁর গভীর পর্যবেক্ষণ শক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন। স্কুল ছাত্র জীবনেই তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। যারা রাজনীতি করতেন তাদের খুব কাছাকাছি চলে যান। ঐ সময়ে বাংলার প্রধানমন্ত্রী এ. কে. ফজলুল হক ও মন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক সফরে এলে তিনি তাঁদের সামনে গিয়ে স্কুলের ছাদ দিয়ে পানি পড়ার অভিযোগ তুলে ধরেন এবং মেরামতের দাবি জানান। তাঁর কথা বলার ভঙ্গি দেখে দুই নেতাই মুগ্ধ হন। সোহরাওয়ার্দী তাঁকে কাছে ডেকে কথা বলেন এবং এলাকার রাজনৈতিক খবরাখবর নেন। তিনি ঠিকানা দিয়ে চিঠি লিখতেও বলেন। শেখ মুজিবের সঙ্গে সেই প্রথম সম্পর্ক গড়ে ওঠে যা আজীবন ছিল। সোহরাওয়ার্দীর রাজনৈতিক আদর্শ শিষ্য হিসেবে শেখ মুজিব গড়ে উঠতে থাকেন। সেই সফরে সম্বর্ধনা জানাতে একটি কমিটি গঠিত হয়। পরবর্তীতে সেই কমিটির একটি গোলমালের ঘটনায় শেখ মুজিবসহ চার পাঁচজনকে আসামী করে বিরোধীরা থানায় একটি মামলা করে। গোপালগঞ্জ থানা হাজতে সাতদিন বন্দি থেকে জামিনে মুক্তিলাভ করেন। পরবর্তীতে ১৫০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দিলে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
    সেই তাঁর প্রথম কারাজীবন এবং এটাও তাঁর জীবনে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। ১৯৪২ সালে এন্ট্রান্স পাশ করে শেখ মুজিব কলকাতায় ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। বৃটিশ শাসিত দুই বাংলা একত্রে বাংলা বা বেঙ্গল হিসেবে পরিচিত ছিল। বাংলার মেধাবী, মননশীল ছাত্ররা ইসলামিয়া কলেজে লেখাপড়া করতো এবং বেকার হোস্টেলে থাকতো। ১৯২৬ সালে ইসলামিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সালে এর নামকরণ হয় সেন্ট্রাল কলকাতা কলেজ। ১৯৬০ সালে উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ মাওলানা আবুল কালাম আজাদের নামে রাখা হয়। বর্তমানে মাওলানা আজাদ কলেজ নামে পরিচিত। শেখ মুজিব এখান থেকে ১৯৪৪ সালে আই.এ. এবং ১৯৪৭ সালে বি.এ. পাশ করেন। কলেজের পাশের রাস্তায় তালতলা থানার কাছেই বেকার হোস্টেল। তিনতলা বিরাট ভবন। শেখ মুজিব তিনতলার বাঁদিকের সামনের সারির কোনায় ২৪নং কক্ষে থাকতেন। ছোট্ট কক্ষ, কোন ফ্যান ছিল না তখন। একটি ছোট্ট খাট। পাশেই কাঠের তৈরি পড়ার টেবিল ও চেয়ার। একটি ছোট্ট আলমারীও আছে। বর্তমানে এটি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কক্ষ নামে পরিচিত। তাঁর ছবি ও তাঁর সম্পর্কিত লেখা বইয়ের একটি আলমারিও আছে। পাশের ২৫ নম্বর কক্ষটিও এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর একটি ভাস্কর্য রাখা হয়েছে। দরোজার পাশে দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর একটি সংক্ষিপ্ত জীবনীও রাখা হয়েছে। পাশাপাশি এই দুটি কক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তাঁর সঙ্গীসাথীরাও থাকতেন। সারাদেশ থেকে তাঁর ছাত্র রাজনীতির কর্মী, ভক্ত ও অনুরাগীরা এসে দেখা করতো এখানেই। অনেক সভা করেছেন হোস্টেলে। হোস্টেল সুপার ছিলেন অধ্যাপক সাঈদুর রহমান। ছাত্র-কর্মীদের থাকার জন্য শেখ মুজিব খালি রুম বা বড় হলঘর চাইলেই তিনি কখনও না করতেন না। শেখ মুজিবের প্রতি তাঁর একটা আলাদা স্নেহ-ভালোবাসা ছিল। ইসলামিয়া কলেজের প্রিন্সিপ্যাল ছিলেন ড. এইচ. আর. জুবিরী।
    শেখ মুজিবের প্রতি তাঁর ছিল অপার স্নেহ। বিশেষ করে বি.এ. পরীক্ষায় বসার জন্য তিনি তাঁকে সবরকম সহযোগিতা করেছিলেন। কেননা দাঙ্গা-হাঙ্গামা, পুনর্বাসন ইত্যাদি কর্মকান্ডে শেখ মুজিব তখন ব্যস্ত থাকতেন। মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। একদিকে ছাত্রনেতা হিসেবে বলিষ্ঠ সংগঠক ছিলেন, অপরদিকে মুসলিম লীগের ড্রইংরুম রাজনীতিকে সাধারণের মাঝে নিয়ে আসার কাজে তিনি সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশেমের যোগ্য শিষ্য ছিলেন। বেকার হোস্টেলের ছাত্র সংসদের নেতৃত্বও তিনি নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং একবার সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। শিক্ষক ও ছাত্র সকলের প্রিয় ছিলেন শেখ মুজিব। তাঁর আদর্শ, সাহস ও চিন্তা-ভাবনার প্রতি সকলের শ্রদ্ধা ছিল। স্কুল ছাত্রজীবন থেকেই শেখ মুজিব দেশের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৩৮ সালে মুসলিম লীগের ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে সিরাজগঞ্জে প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সম্মেলনে যোগদান করে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। এ সম্মেলনে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহসহ ভারতের বড় বড় নেতৃবৃন্দ যোগদান করেন। এছাড়াও দিল্লীতে ভারতীয় মুসলিম লীগের সাধারণ সম্মেলনে তিনি দুইবার যোগদান করেন।
    সেখানেও নেতাদের ভাষণ শুনে তিনি অনুপ্রাণিত হন। কলকাতায় ছাত্রাবস্থায় তিনি দাঙ্গা দেখেছেন ও রুখেছেন। ১৯৪৬ সালের সাধারণ নির্বাচনেও তাঁর ভূমিকা ছিল। ছাত্রজীবন থেকেই দেশপ্রেম ও দেশের জন্য কাজ করা তাঁর স্বভাবের অংশ হয়ে ওঠে। ছাত্রজীবনে তাঁর কর্মকাণ্ড, বিচক্ষণতা ও ভাষণ শুনে সবাই আকৃষ্ট হতো। ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে শেখ মুজিব ঢাকায় এসে ১৪০নং মোগলটুলীর ‘কর্মী-ক্যাম্পে’ ওঠেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং সলিমুল্লাহ হলে মাঝে মাঝে থাকতেন।
    ঢাকায় এসে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন এবং মুসলিম ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাচারিতা ও বাংলা বিরোধী ভূমিকার জন্য তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেন। তিনি পূর্ব বাংলা মুসলিম ছাত্রলীগ গঠন করেন। যুবলীগেরও একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। খাজা নাজিমুদ্দিনের বাংলাভাষাবিরোধী ভূমিকা এবং উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার হুমকির বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজ যখন গর্জে ওঠে, তিনিও তাদের সঙ্গে নেতৃত্ব দেন। ১৯৪৮ সালে প্রথম প্রতিবাদ ও হরতাল পালিত হলে শেখ মুজিবও সবার সঙ্গে গ্রেফতার হন। পরে পূর্ব বাংলার মূখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়ে সবাইকে মুক্তি দেন। এরপর শেখ মুজিব কৃষকদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করেন। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেন। এসময় উপাচার্যের বাড়ি ঘেরাও কালে তাঁকেও পুলিশ গ্রেফতার করে এবং অনেকগুলো মামলা দায়ের করে। কারাগারে থাকার সময় তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগের যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন। জেল থেকে বের হয়ে এক ছাত্রসভায় বক্তৃতা দিয়ে তিনি ছাত্র রাজনীতি থেকে বিদায় নেন এবং জাতীয় রাজনীতিতে যোগদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে বহিস্কার করা হয়েছিল। জেলে থাকাকালে সরকার তাঁকে জরিমানা ও মুচলেকার প্রস্তাব দেয় এবং জানায় তিনি যদি রাজনীতি না করেন, তাহলে ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেয়া হবে। তিনি সরকারি প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছিলেন।

    কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে শেখ মুজিব টুঙ্গিপাড়ায় গ্রামের বাড়িতে কিছুদিন অবস্থান করেন। তাঁর পিতা শেখ লুৎফর রহমান তাঁকে লন্ডনে গিয়ে ব্যারিস্টারি পড়তে বলেন। কিন্তু শেখ মুজিব ততদিনে পাকিস্তানের শাসকদের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তকে অনুধাবন করে ফেলেন। তিনি তাঁর প্রিয় বাংলার জনগণকে পাকিস্তানের শোষণের মধ্যে ফেলে রেখে লন্ডনে গিয়ে আর পড়তে চাইলেন না। তিনি রাজনীতি করার সদিচ্ছা প্রকাশ করে বাংলার মানুষের আদায়ের দাবিতে আবার ঢাকা চলে এলেন। তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবনের ইতি ঘটে। কিন্তু ঘরে বসে বই পড়ার অভ্যাস থাকায় তিনি একটি লাইব্রেরি গড়ে তোলেন। স্বচ্ছ মনের মানুষ ছিলেন, রাজনৈতিক চিন্তার দিক থেকে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ছিলেন, সাহসী, সৎ ও দৃঢ় চারিত্রিক আদর্শের অধিকারী ছিলেন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর আতঙ্ক ছিলেন একমাত্র শেখ মুজিব। মন্ত্রীত্বের লোভ, লাইসেন্সের টোপ এবং ব্যবসা-বানিজ্যের নানা সুযোগ সুবিধা দিয়ে তখন অনেক নেতাকে ক্রয় করা যেত। কিন্তু শেখ মুজিব তাঁর লক্ষ্যে দৃঢ় ছিলেন। জেল-জুলুম মামলা–ফাঁসির ভয় তাঁর মাথা নত করতে দেয়নি। বাংলার মানুষের মুক্তির দাবিতে, অধিকার আদায়ে, শোষণের বিরুদ্ধে তিনিই ছিলেন সোচ্চার প্রতিবাদী। তাঁর বজ্রকন্ঠ পাকিস্তানের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল। দেশ ও মানুষকে তিনি তাঁর হৃদয়ের আধেয় করে একজন আত্মত্যাগী দেশপ্রেমিক নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হন। ছাত্রজীবন থেকে যে শিক্ষা ও দীক্ষা তাঁর জীবনকে আলোকিত করে তোলে, তার শিখা চিরন্তন করে রেখে গেছেন তিনি।

Friday, November 10, 2017

উত্তর চাই দেশবাসীর নিকট উত্তর চাই

https://liberationwar1971.blogspot.com/


মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ডঃ আব্দুস সোবহান গোলাপ তার বিজনেস কার্ডে লিখেছেন তিনি চাদপাড়া ও ব্যারাকপুরের মুক্তিযোদ্ধা। আমিও চাদপাড়া ও ব্যারাকপুরের মুক্তিযোদ্ধা। ডঃ গোলাপ ক্ষমতায় বলে স্বীকৃতি পাবে আর আমি ক্ষমতা নেই বলে মন্ত্রীর অপমান সহ্য করবো? তাতো হয় না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? এক মায়ের পেটে হিন্দু মুসলিমের জন্ম হয় না। হয় দুইজনই হিন্দু নয়তো দুইজনই মুসলমান। এ প্রশ্ন আ ক ম মোজাম্মেল হককে করেছিলাম। সে মালদ্বীপে বলে গিয়েছে যে গোলাপ মুক্তিযোদ্ধা ছিল না। তাহলে সে মুক্তিযোদ্ধার সনদ কোথায় পেল? মন্ত্রী কোন উত্তর দেয়নি।

Friday, April 28, 2017

যেভাবে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিদের উত্থান


যেভাবে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিদের উত্থান
রণেশ মৈত্র

যেভাবে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিদের উত্থান

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের যে ব্যাপক উত্থান ঘটেছে, তাদের কার্যক্রম ক্রমশই সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং ইতোমধ্যেই বহুলাংশে তাদের বিস্তার ঘটাতে পেরেছে। বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী তা নিরন্তর অস্বীকার করে এগুলো ‘কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা নয়’ বা ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে উড়িয়ে দিতে চাইলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের জঙ্গি উত্থান এক মারাত্নক উদ্বেগের সঞ্চার করেছে এবং তার বহি:প্রকাশ ঘটেছে গত ৯ জুনে প্রকাশিত নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি বিস্তারিত প্রতিবেদনে।
ওই প্রতিবেদনটিতে প্রধানত: বাংলাদেশের সরকারি মহলের কর্মকর্তাদেরই বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে ইসলামী লেবাস পরিহিত যে তরুণটি ঢাকার একটি জনাকীর্ণ চেকপোষ্টের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, সে অধুনা তৎপর পুলিশের দৃষ্টি এড়াতে পারেনি। তরুণটিকে গ্রেফতার করা হয়। অত:পর দেখা যায়, যে একটি চাপাতি এবং লাইসেন্সবিহীন পিস্তল ও ছয়টি বুলেট নিয়ে যাচ্ছিল। তরুণটির কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার হওয়ায় একটি আতঙ্কের কারণ বিগত তিনটি বছর ধরে বাংলাদেশে ‘নাস্তিক’ অভিধায় অভিহিত করে স্বাধীনচেতা লেখক, মুক্তমনা ব্লগার, মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী, বিদেশী নাগরিক, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং অপরাপর নানাবিধ পেশায় নিয়োজিত সম্মানিত ব্যক্তিদেরকে হত্যা করে চলেছে।
এই হত্যাকারী আসলে কারা সে সম্পর্কে খুব কমই জানা গেছে। তবে এইটুকু শুধু জানা যায় যে তারা ইসলামের নামে ‘জিহাদের কর্মী এবং ক্রমশই তাদের জিহাদ নামক হত্যালীলা অধিকতর সংখ্যায় সংঘটিত হচ্ছে। আটককৃত ঐ তরুণটি পুলিশের নানা প্রশ্নের জবাবে বেশী কিছু বলতে রাজী হয়নি। শুধুমাত্র বলেছে যে তার নাম সাইফুল ইসলাম, বয়স ২৩ বছর এবং স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। কিন্তু মাত্র ছয় দিনের ব্যবধানে চিত্রটি পাল্টে গেল যখন ১৯ বছর বয়সী অপর দু’জন একটি সফল হত্যালীলা পরিচালনা করে ছুটে পালানোর সময় গ্রেফতার হয়ে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে প্রকাশ করে দেয় যে ২৩ বছর বয়স্ক সাইফুল ইসলাম তাদেরই সহকর্মী, কোনো মাদ্রাসা শিক্ষক নয়।
ছোট্ট এই ঘটনাটি বাংলাদেশের পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে অধিকতর সতর্ক এবং সক্রিয় হতে বাধ্য করেছে। এখন তারা অনেক গভীরে ঢুকে নানা অজানা তথ্য উদঘাটনে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। জঙ্গিদের পরিকল্পনা তার বাস্তবায়ন এবং হত্যার উদ্দেশ্য জেনে বাংলাদেশের মানুষ তো বটেই বাস্তবিক পক্ষেই সমগ্র বিশ্বে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের পুলিশের কাউন্টার টেররিজমের প্রধান মনিরুল ইসলাম তার তদন্ত কাজগুলির বিবরণ জনসমক্ষে তুলে ধরেছেন। বিগত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি এই দায়িত্ব প্রাপ্ত হন।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ৩৯ জনকে এই জঙ্গিরা বর্বরোচিতভাবে হত্যা করেছে এবং এতে ব্যবহৃত অস্ত্র হলো চাপাতি, বন্দুক বা পিস্তল ও বোমা। এই হত্যাকাণ্ডগুলির বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চাপাতি ব্যবহৃত হয় এবং তাই দিয়ে ভিকটিমের পিঠে আঘাত করে গলা কেটে ফেলতে দেখা যায়। এরকম হত্যা ইদানিং বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এপ্রিলে এভাবে পাঁচজনকে এবং মে মাসে চারজনকে হত্যা করা হয় এবং কমপক্ষে আরও তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে জুনের প্রথমার্ধেই।
গত ৫ জুন একই দিনে উত্তরাঞ্চলের নাটোরের একজন খ্রিষ্টান মুদির দোকানি ও চট্টগ্রামে তথাকার পুলিশ সুপারের স্ত্রীকে হত্যা করা হয়। অত:পর দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে একজন হিন্দু পুরোহিতকে বিশাল মাঠের মধ্যে খুন করা হলো। দীর্ঘ ইন্টারভিউতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজমের প্রধান মনিরুল ইসলাম তার তদন্ত কাজের ফলাফল খুঁটিনাটি তুলে ধরে বলেন, দুইটি জঙ্গি গ্রুপ এই হত্যাকাণ্ডগুলি চালিয়ে থাকে। তারা হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক রিক্রুট করেছে, অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং অত:পর এক একজন কমান্ডারের নেতৃত্বে তাদেরকে বিভিন্ন গ্রুপে পাঠিয়ে এই হত্যালীলা পরিচালনা করছে। তারা অত্যন্ত সতর্কভাবে তাদের লক্ষ্য (টার্গেট) নির্দিষ্ট করে যাতে জনমত তাদের পক্ষে থাকে এবং এভাবেই খুনীদের প্রশিক্ষিত টিম গড়ে তোলে। তাদের মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের মিশ্রিত ধর্মনিরপেক্ষ ও ইসলামী সংস্কৃতিকে পরিবর্তন করে নিখাদ ইসলাম ধর্মীয় রাষ্ট্রে বাংলাদেশকে পরিণত করা।
বাংলাদেশ সরকার এখানে স্বীকার করেন যে ঐ দুটি জঙ্গি গ্রুপই এগুলি পরিচালনা করছে এবং তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করতে। জঙ্গিদের নেতারা যখন ধরা পড়বেন, তাদের মতে, এই হত্যালীলা ও আক্রমণ বন্ধ হবে। তবে ইসলামী মৌলবাদ যে ইসলামসম্মত নয় তা জনগণকে বুঝিয়ে আনতে হবে।
সরকার এখন বলেছে, উভয় জঙ্গি গ্রুপের মূল নেতাদেরকে তারা চিহ্নিত করতে পেরেছেন- ঐ নেতারাই এই ঘটনাগুলির জন্য দায়ী। পূর্ব ভারতের সংলগ্ন মুসলিম প্রধান রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে ১৯৭১ সালে এবং তখন একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক বাহিনী সমর্থিত সরকার একতা গড়ে প্রায় তিন দশক শাসন কাজ পরিচালনা করে। ঐ সময়েই ইসলামী মৌলবাদের প্রসার ঘটতে শুরু করে। ২০০৯ সালে একটি ধর্ম নিরপেক্ষ সরকার ক্ষমতায় পুনরায় অধিষ্ঠিত হন বিপুল সংখ্যক আসনে বিজয়ী হয়ে শাসন ক্ষমতায় বসেন। তবে ধর্মনিরপেক্ষতা বাংলাদেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠির কাছে আজও গ্রহণযোগ্য হয় নি-তাই গোঁড়া ইসলামী সংস্কৃতি প্রবর্তিত হয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের ওই প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, উগ্র ধর্মান্ধ জঙ্গিরা ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদকে সমাজে বহুলাংশে হেয় ও অগ্রহণযোগ্য করে তুলতে সক্ষম হয়েছে। তারা ধর্মনিরপেক্ষতার বিশ্বাসী সরকারটিকে আত্নরক্ষামূলক অবস্থানে ফেলতেও সক্ষম হয়েছে। ফলে, একদিকে সরকার হত্যাকাণ্ডগুলির প্রতিবাদ জানাচ্ছে, অপরদিকে লেখকদেরকে ইসলামের বিরুদ্ধে বা তার সমালোচনা করে না লেখার আহবান জানিয়েছে-আহবান জানিয়েছে ‘অস্বাভাবিক মৌনতা’র সমর্থনে কোনো কিছু না বলতে।
এ বিষয়ে ইনষ্টিটিউট অব ল এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এর পরিচালক অবসর প্রাপ্ত মেজর আব্দুর রশীদ বলেছেন, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালালে হত্যালীলা বন্ধ হবে কিন্তু সরকার ততটা এগুতে রাজী না; এই ভেবে যে তার প্রতিকূল প্রতিক্রিয়া হতে পারে। দেশের রাজনীতি এখন দুটি শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে একটি ধর্মনিরপেক্ষ অপরটি ইসলামভিত্তিক। এ কারণেই সরকার অত্যন্ত সতর্ক।
এ বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, যখন মৌলবাদীদের ব্যাপক ক্রিয়াকলাপের বিরুদ্ধে ‘শাহবাগ আন্দোলন’ নামে পরিচিত শক্তিশালী গণআন্দোলন গড়ে তুলতে চেষ্টা করা হয়, জঙ্গিরা তখন ইচ্ছাকৃতভাবেই লোকজনকে হত্যার মধ্য দিয়ে হত্যাভিযান শুরু করে। শাহবাগ আন্দোলন গড়ে ওঠে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অবসানের দাবীতে এবং ১৯৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করার দাবীতে। এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে যখন বেশ কয়েকজনকে ফাঁসি দেওয়া হলো তখন ইসলামী জঙ্গিরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
উল্লেখ্য, শাহবাগ আন্দোলনটি ২০১৩ সালে গড়ে ওঠে ব্লগারদের নেতৃত্বে।
মনিরুল ইসলাম নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেন, এই হত্যালীলা চালানোর দায়িত্ব নিয়েছে দুটি জঙ্গি গ্রুপ। এক, আনসার আল ইসলাম- যারা অত্যন্ত ফলপ্রসূ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দুর্ধর্ষ খুনি গড়ে তুলেছে তাদের অপারেশন কমান্ডারদের দ্বারা। এসব কমান্ডারদের নাম প্রকাশে তিনি অবশ্য অস্বীকৃতি জানান; কারণ তাদেরকে কঠিন নজরে রাখা হয়েছে। তবে এদের নেতা বা কমান্ডাররা ২৫ জন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত খুনি তৈরি করেছে-যাদের কেউ কেউ সাম্প্রতিক ৩/৪টি আক্রমণ পরিচালনা করেছে। দ্বিতীয়ত: জামাতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ-জেএমবি। এদেরকে চিহ্নিত করা হয় ২০০৫ সালে সারা দেশে একই সাথে প্রায় ৫০০ বোমা ফাটিয়ে ছিল সাফল্যের সাথে। এদেরই একটি অংশ এখন অধিকতর সক্রিয়।
সাক্ষাতকারে মনিরুল ইসলাম অবশ্য আরও বলেন যে এই দুটি গ্রুপই দুর্ধর্ষ ইসলামী জঙ্গিগ্রুপ হলেও এরা কেউই আল কায়েদা বা আইএস জাতীয় আন্তর্জাতিক ইসলামী জঙ্গি সংস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। এই গ্রুপ দুটি শাহবাগ আন্দোলনের বিরুদ্ধে ত্বরিত সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে একজন ব্লগারকে হত্য করে এই অভিযোগ এনে যে তিনি সরাসরি ইসলামে বিরুদ্ধে লিখে থাকেন। তিনি লিখতেন ‘থাবা বাব’ এই ছদ্মনামে। ঢাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির কতিপয় মেধাবী ছাত্র এই নামে লিখতেন এবং তার প্রতিক্রিয়ায় জসীম উদ্দিন রাহমানি নামক ৪৫ বছর বয়স্ক একজন ইসলামী খাদেম ঐ ব্লগারদের হত্যা করার নির্দেশ দেন। অবশ্য জসীম উদ্দিন রাহমানিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অার ৩২ বছর বয়স্ক একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর একজন ছাত্র রেদোয়ানুল আজাদ, আনসার আল ইসলামের অপর একজন নেতা জুনিয়র ছাত্রদেরকে জসীম উদ্দিন রাহমানির উদ্দীপক বক্তব্য দিয়ে ক্ষেপিয়ে তুলে থাবা বাবা নামের লেখকদেরকে হত্যা করতে উত্তেজিত করে তুলতে থাকে।
ঐ রেদোয়ানুল ইসলামের বক্তব্য ছিল, ‘একজন আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসী হিসেবে তাদেরকে হত্যা করাটা তোমাদের পবিত্র দায়িত্ব।’ আটক হওয়া একজন আদালতে এমন বক্তৃতার কথা স্বীকারও করেছে। সে আদালতে বলেছে, ঐ বক্তব্যে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা থাবা বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে- কারণ থাবা বাবা আল্লাহকে অপমানিত করেছে। আটক ওই জঙ্গির নাম ফয়সাল বিন নঈম (২৪)। সে বলেছে, থাবা বাবার ছবি ফেসবুকে দেখে এবং তখন থেকে তাকে খুঁজতে থাকে এবং এক পর্যায়ে অনুরূপ চেহারার একজননের সন্ধান পায় শাহবাগ আন্দোলনকারীদের মধ্যে। অবশেষে একজন ৩২ বছর বয়স্ক আর্কিটেক্ট-যার নাম আহমেদ রাজীব হায়দার তাকেই থাবা বাবা হিসেবে চিহ্নিত করে। অত:পর রাজীবের দৈনন্দিন কাজের রুটিন অনুসরণ করে শেষ পর্যন্ত একদিন তারা তিনজন মিলে রাজীবের বাড়ীর সামনে রাত্রি প্রায় ৯টার দিকে পেয়ে যায়। নঈম তখন চাপাতি দিয়ে তার মাথার পেছনে, গলায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ঐ আকষ্মিক আঘাতের ফলে।
এরপর প্রধান ইসলামী জঙ্গি গ্রুপ হিসেবে আনসার আল ইসলাম প্রচার করতে শুরু করলো যে নাস্তিক ব্লগারদের হত্যাকারীরাই হলো প্রকৃত ইসলাম সেবক। অন্তত: দুটি জাতীয় দৈনিক প্রকাশিত কয়েকটি লেখা তাদেরকে আরও বেশী করে ক্ষুব্ধ করে তোলে এবং পাঠকদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশও এতে ক্ষুব্ধ হন বলে অভিযোগ। এরা শুরুতে শাহবাগ আন্দোলনের সমর্থকও ছিলেন। পরবর্তী দুই মাসে আরও দুইজন ব্লগারকে হত্যা করা হয়। পুলিশ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সব ছাত্রকে জঙ্গি হিসেবে সক্রিয় ছিল তাদেরকে গ্রেফতার করতে শুরু করে। বিশেষ করে যারা হায়দার হত্যায় জড়িত ছিল। পুলিশ পুনরায় রাহমানিকেও গ্রেফতার করে। এরফলে আনসার আল ইসলাম আরও বেশী হত্যাকাণ্ড পরিচালনা থেকে বিরত হয় এবং এরাই আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বলেও পরিচিত। কিন্তু তারা পুনরায় পুনর্গঠিত হয় সন্ত্রাসী সেল এ যার সংখ্যা জানা যায়নি।
মনিরুল ইসমাল বলেন, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে আনসার আল ইসলাম অভিজিত রায় নামক আমেরিকা প্রবাসী এক বাংলাদেশী ব্লগারকে ঢাকায় হত্যা করে। অভিজিত রায় আমেরিকাতে একটি বায়োটেকনোলজি ফার্মে দিনে কাজ করতেন এবং রাত্রিতে নানা বিষয়ে বিস্তর লেখালেখি করতেন যার মধ্যে ধর্ম, বিজ্ঞান, সমকামিতা প্রভৃতি ছিল। বিপুল সংখ্যক আনসার আল ইসলাম জঙ্গিকে কারারুদ্ধ করার পর জেলের ভেতর থেকে পুলিশ এক গোপন তথ্যে জানতে পারে যে পুনর্গঠিত আনসার আল ইসলাম তাদের কর্ম কৌশল পরিবর্তন ঘটিয়েছে এবং তারা মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে বিপ্লবী করতে মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে রিক্রুট করতে শুরু করেছে। মাদ্রাসার শিক্ষকরাও বাদ যাচ্ছেন না। ২০১৩ সালে ব্লগারদের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা শিক্ষক ছাত্রদের তীব্র প্রতিবাদ সংগঠিত করতে দেখে তারা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে রিক্রুটের চাইতে মাদ্রাসাগুলির উপর বেশী গুরুত্ব আরোপ করতে শুরু করে। অত:পর তারা আরও গুরুত্ব দিয়ে আদর্শগত ও অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিতে থাকে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে।
অভিজিত রায়ের হত্যার এক মাস পরেই ওয়াশিকুর রহমান বাবু (২৭) নামক অপর একজন ব্লগারকে হত্যা করে। তারা একটি এপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়ে সেখানে দুইজন সিনিয়র অস্ত্র প্রশিক্ষক থাকতো একটি ভষ্যিতে খুনী হিসেবে প্রশিক্ষণ নেবেন এমন একটি গ্রুপের মাদ্রাসা ছাত্রের সাথে। একজন শিক্ষা দিত কিভাবে চাপাতি দিয়ে আঘাত করলে মানুষ নির্ঘাত খুন হয় এবং কিভাবে পিস্তল ব্যবহার করতে হয় যদি চাপাতি দিয়ে আঘাতের সময় কেউ ছুটে আসে তাকে বাঁচাতে এমন লোকজনদের হটিয়ে দিতে। নিহত ব্লগার আশিকুর রহমান বাবুর ছবি এবং ঠিকানা তাদের হাতে দিয়ে বাবুর বাড়ীর কাছে মহড়া দিতে পাঠানো হতো এটা নির্ধারণ করতে যে; কোন পরিস্থিতিতে কখন নিরাপদে হত্যা করা যেতে পারে। অন্যদিকে বাবুর কিছু সংখ্যক নির্দিষ্ট লেখা পড়িয়ে ঐ প্রশিক্ষণার্থী গ্রুপকে জিজ্ঞেস করা হতো, এই সব ধরণের লেখা যে লেখে তার শাস্তি কি হওয়া উচিত? শিক্ষার্থীরা সমস্বরে জবাব দিত ‘একমাত্র মৃত্যু’।
Moktel H. Mukthi's photo.মনিরুল ইসলাম জানান, পুলিশ এখন এদেরকে ধরার সর্বাত্নক প্রচেষ্টা করছে। সন্দেহভাজনদের ছবিসহ জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় পুলিশের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপন দিয়ে বলা হয়েছে যে, ‘যারা বা যিনি এদের ধরার ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য দিতে পারবে তাকে পাঁচ লক্ষ টাকা পুরষ্কার দেওয়া হবে। অন্য জঙ্গি গ্রুপ জামাতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ-জেএমবি অবশ্য আনসার আল ইসলামের চেয়ে কম সক্রিয়। কতিপয় ভুল পদক্ষেপের কারণে তাদের সমর্থক সংখ্যা কমে গেছে। এই গ্রুপ ৫০ থেকে ১০০ জন মাদ্রাসা ছাত্রকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল খুনী হিসেবে তাদেরকে চারজন করে এক একটি গ্রুপে সংগঠিত করেছিল। কিন্তু এরা এমন ব্যক্তিদের খুন করে ফেলে যারা ব্যাপক সক্রিয় হয়ে ওঠেন। এদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অন্যজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক যিনি দরিদ্র রোগীদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা সেবা দিতেন।
যখন হত্যাকারীদেরকে গ্রেফতার করা হলো, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেল যে তারা ৬৬ বছর বয়স্ক একজন জাপানী নাগরিককে হত্যা করেছে। অথচ ২০১৫ সালেই তাকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা হয়েছিল। ফলে এই খুনীরা দ্রুত জনপ্রিয়তা হারায় এবং জনগণ ওই খুনীদেরকে ধরতে পুলিশকে ব্যাপক সহযোগিতাও দেয়। পুলিশ এখন তাদের নেতাদেরকে ধরতে সচেষ্ট। বাংলাদেশে বর্তমানে মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, বলেন মনিরুল ইসলাম।
অনেকে লুকিয়ে আছেন-অনেকে দেশত্যাগী হয়েছেন-আবার অনেকে তাদের দৈনন্দিন রুটিন পরিত্যাগ করে লেখালেখি ছেড়েছেন এবং এমন কি, সন্তানদের স্কুলে আনা নেওয়াও ছেড়েছেন। এই জঙ্গিদের কার্যকলাপের ফলে জাতিকে এই মূল্য দিতে হচ্ছে, বলেন সুধীজনেরা।
নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামের ইন্টারভিউ নিয়ে লেখাটি হয়তো আগ্রহী পাঠক পাঠিকাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে এবং দেশের পরিস্থিতি বুঝতেও কিছুটা সহায়ক হবে। পাবনার আশ্রমসেবক হত্যাকাণ্ড লেখাটি শেষ হতে না হতেই জানলাম, গত ১০ জুন ভোরে পাবনার বিখ্যাত (এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি সমৃদ্ধ) হেমায়েতপুরের শ্রী শ্রী অনুকূল ঠাকুরের আশ্রমে ৪০ বছর ধরে সেবক হিসেবে কর্মরত ৬২ বছর বয়স্ক নিত্যানন্দ পান্ডেকে ভোর বেলায় নৈমিত্তিক প্রাত:ভ্রমণকালে একই পদ্ধতিতে চাপাতি দিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীরা আঘাতই শুধু করেনি তার মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।
আশ্রম কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এই নিত্যরঞ্জনকে হত্যা করা হলো পুলিশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে। কারণ আগের দিন আইজির নেতৃত্বে পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা (সম্ভবত: চট্টগ্রামের এসপির স্ত্রী হত্যার পটভূমিতে) সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ঐ দিন রাত ১২টা এক মিনিট থেকেই জঙ্গি-সন্ত্রাসী ধরার জন্য দেশব্যাপী সমন্বিত সপ্তাহব্যাপী অভিযান শুরু করবে এবং তা করাও হয়। ওই অভিযান শুরুর মাত্র ৬-৭ ঘণ্টা মধ্যেই এবং পবিত্র রমজানের শুরুতেই হেমায়েতপুর আশ্রমের নিষ্ঠাবান সেবক নিত্যানন্দ পান্ডেকে নির্মমভাবে আশ্রমের নিকটেই খুন করা হলো। আমি শোকাহত। আমরা সমগ্র জাতি শোকাহত। গোটা পৃথিবী উদ্বিগ্ন আজকের বাংলাদেশ নিয়ে।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)

MukthizCreation

SUPPORT AWAMI LEAGUE, VOTE NOUKA ONCE AGAIN
তারেক খালেদা ফালু দুদু মীর্জা আব্বাস সাদেক হোসেন খোকা ইউনুস এরা চোর কি ভাল? এ জাতীয় জরিপ করে সময় নষ্ট না করে আমার মনে হয় আওয়ামী লীগের প্রচারের দিকে গুরুত্ব দিলে বেশী লাভবান হবো।
মাননীয় নেত্রী এবং সজীব ওয়াজেদ জয়ও সেদিকেই গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন যে আওয়ামী লীগ যতটা কাজ করে তার এক ত্রিতিয়াংশও প্রচার হয়না; যেটূকু হয়, সেটূকু ঢাকা পরে যায় বি এন পি জামাত শিবিরের অপপ্রচারের কারনে। সকলের নিকট তাই প্রত্যাশা আরো অনেক বড় কিছু। প্লিজ সবাই দলীয় প্রচার করুন; অন্যের দুর্নামের চেয়ে নিজ দলের প্রশংসা করে সময় নষ্ট করি। যাতে আগামী ২০১৯ এর নির্বাচনে নৌকার স্বপক্ষে কিছুটা হলেও কাজে লাগে। জনমত গড়ে তোলার কাজে আমরা ঐকান্তিক আগ্রহ নিয়ে ঝাপিয়ে পড়লে কেন সফল হব না? আমি যদি এই ৬৫ বছর বয়সে প্রতিদিন আওয়ামী লীগ কে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা দিতে পারি, আপনারা কি প্রতিদিন ১ থেকে দুই ঘন্টা দিতে পারেন না? পারেন। কিন্তু কেউ কেউ দেখছি অযথা একটি অহেতুক / অবান্তর বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে নিজের সময়ের টুটি চেপে ধরেন এবং বন্ধুদেরকেও সে কাজে আগ্রহী করে তোলেন।
কেউ ভুল বুঝবার কিছু নেই; আমি এমনই বিগত ১৭ বছর ধরে ফেচবুকে নিজের খাই আওয়ামী লীগের মোষ তাড়াই।
মোকতেল হোসেন মুক্তি
মুক্তিযোদ্ধা
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
















 Our great two sisters, the pride daughter of Bangabandhu.
আমাদের হাসু আপা ও তাঁর স্নেহের রেহানা। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট জাতিরজনকের পরিবারের ১৮জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়; মহান আল্লাহর অশেষ করুনা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকার কারনে আজ বাঙ্গালী জাতি একজন সফল দীপ্ত দৃঢ় প্রত্যয় ও মনোবলের একজন রাষ্ট্রনায়ক পেয়েছি। আমরা এই দুই এতিম বোনের সুদীর্ঘ আয়ূ ও সুশাস্থ্য কামনা করি। তাদের উপর আল্লাহর বিশেষ রহমত নাজিল হোক; সকল বিপদ আপদ দুর্নাম থেকে আল্লাহ যেনো রক্ষা করেন।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু ।